এ মোর একা’র গর্ব আজি এ নিখিলে —
তুমি যাহা নও,— তাই, তুমি মোর কাছে ছিলে।
এ মোর একা’র অহঙ্কার।
তুমি ছিলে কায়াহীন নিশ্চল নীরন্ধ্র অন্ধকার-
তারি মাঝে অমর্ত্যলোকের বিভা
খুঁজিয়া করেছে আবিস্কার
একমাত্র আমার প্রতিভা।
তুমি ছিলে কলঙ্কিনী অমা,
হেরিলাম তারি মাঝে আমি শুধু পূর্ণিমার সম্পূর্ণ সুষমা ;-
একমাত্র আমি। – এই গর্ব মোর –
যাহা নও, -তারি স্বপ্নে রেখেছিনু তোমারে বিভোর।
তুমি কভু জানিতে না কি তোমার দাম,
আমার চোখের জলে তাই দেখালাম ।।
বিধাতার সৃষ্টি তুমি, -হে নিরাভরণা নারী, -বাসনার সোনার প্রতিমা,–
কারারুদ্ধা, – চতুর্দিকে বন্ধনের সীমা ;
ক্ষণিকা ও ক্ষীণ-
মোর প্রেম-স্বর্গ হ’তে পরম উত্সর্গ-পত্র লভিলে প্রথম যেই দিন,
লভিলে বিস্তীর্ণ মুক্তি, -আপন আয়ত্তাতীত অপূর্ব মহিমা,
বিরাট সম্মান,
মোর কন্ঠ-মাল্য-দানে তোমারে করেছি মূল্যবান।।
মোর বুকে বেজেছিল তব ক্ষুদ্র ব্যর্থতার ব্যথা,
মণ্ডিত করেছি তোমা’ উদ্বৃত্ত ঐশ্বর্যে মোর- দিয়াছি অনন্ত সম্পূর্ণতা।
বিধাতার সৃষ্টি তুমি, হে লীলাললিতা কান্তা কামাক্ষী কামিনী,
রাশীকৃত চুম্বনের ফেনা ;-
মোর কাছে চিরজন্ম চিরমৃত্যু র’বে তুমি ঋণী,
তুমি যাহা, -মোর কাছে তুমি তা ছিলে না।।
পুরুষের কাম্য তুমি, জীর্ণ কাব্য তুমি বিধাতার,
সেই কাব্য একদিন মোর হস্তে লভেছিল নবীন সংস্কার।
তুমি স্হূল, সুপ্রত্যক্ষ, -সন্ধান করিছে তোমা’ উদগ্র ইন্দ্রিয়,
তুমি প্রয়োজন।
স্পর্শের রোমাঞ্চ-হর্ষে আমি শুধু লভিয়াছি অকূল অমিয়-
মানস-আকাশে তোমা, রাখিয়াছি করি’ চিরন্তন
হে অচিরদ্যুতি,
শুনিয়াছি তোরি মাঝে স্বর্গের কাকুতি।
অনন্ত মৃত্যুর তীরে তব তরে রেখেছিনু স্নেহদীপশিখা,
নিকটে আছিলে যবে, ডেকেছিনু – ওগো সুদূরিকা।
তুমি নারী মানুষের, বিধাতার, শুধু মোর নই,
তবু তোরে দিনু ভিক্ষা, – কবির বিরহ,-
শ্রেষ্ঠ পুরস্কার।
এ নিখিলে এ গর্ব তোমার।।
মন্তব্য যোগ করুন:
কবিতাটি নিয়ে আপনার মন্তব্য জানান নিচের ফরমটির মাধ্যমে ।